নিজস্ব প্রতিবেদক:
গোপালগঞ্জ শহরে রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় অন্তত পাঁচজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শনিবার ভোর রাত থেকে শহরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ডাকা সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে এবং পরে গুলি ছুঁড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, “নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাত ৩টা থেকে শহরে কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় শহরের প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। দোকানপাট বন্ধ, যান চলাচল সীমিত এবং মোবাইল ইন্টারনেটে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেক পরিবার তাদের শিশু ও প্রবীণ সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য শহরের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
এদিকে এনসিপির মুখপাত্র এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা করা হয়েছে।” অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, “তাদের উসকানিতে শহরের শান্তি নষ্ট হয়েছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জের এই সংঘর্ষ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। গোপালগঞ্জ রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জরুরি বৈঠক ডেকেছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ উপস্থিতি রাখা হবে।”
0 on: "গোপালগঞ্জে সহিংসতা, কারফিউ জারি: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন"